জৈব যৌগ ও এর ইতিহাস

জৈব যৌগ:
হাইড্রোকার্বন ও হাইড্রোকার্বনের জাতক সমূহকে একত্রে জৈব যৌগ বলে।  

জৈব রসায়ন:

রসায়ন বিজ্ঞানের যে শাখায় হাইড্রোকার্বন ও হাইড্রোকার্বনের জাতক সমূহের উৎস, প্রস্তুত প্রণালী, সংযুক্তি ও গঠন, ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম, ব্যবহার ইত্যাদি পর্যালোচনা করা হয় সেই শাখাকে জৈব রসায়ন বলা হয়।

জৈব যৌগ তথা জৈব রসায়নের ইতিহাস:

১৬৭৫ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী নিকোলাস লেমেরী খাদ্য, পরিধেয়, ব্যবহার্য ও অব্যবহৃত অসংখ্য রাসায়নিক দ্রব্যাদিকে তাদের উৎস অনুসারে প্রধানত তিন শ্রেণীতে বিভক্ত করেন। যথা-

    (১) খনিজ পদার্থ  

    (২) উদ্ভিজ্জ পদার্থ  

    (৩) প্রাণিজ পদার্থ।

পরবর্তী পর্যায়ে ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে ফরাসী বিজ্ঞানী ল্যাভয়সিয়ে প্রমাণ করেন যে, উদ্ভিজ্জ পদার্থে কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন এবং প্রাণিজ পদার্থে এই তিনটি মৌল ছাড়াও নাইট্রোজেন ও কখনও কখনও ফসফরাস, সালফার প্রভৃতি মৌল

থাকে।

১৮০৮ সালে সুইডিশ বিজ্ঞানী বার্জেলিয়াস উদ্ভিদ ও প্রাণী অর্থাৎ সজীব পদার্থ থেকে প্রাপ্ত যৌগসমূহকে জৈব যৌগ এবং খনিজ অর্থাৎ নির্জীব পদার্থ থেকে প্রাপ্ত যৌগসমূহেকে অজৈব যৌগ নামকরণ করেন অর্থাৎ প্রবর্তন করেন।

১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী বার্জেলিয়াস প্রাণশক্তি মতবাদ প্রস্তাব করেন যে, জৈব যৌগসমূহ কেবল সজীব উদ্ভিদ ও প্রাণিদেহে এক রহস্যময় প্রাণ শক্তির প্রভাবে উৎপন্ন হয়। তাই পরীক্ষাগারে জৈব যৌগ তৈরী করা সম্ভব নয়।

১৮২৮ খ্রিস্টাব্দে ফ্রেডারিক উহলার পরীক্ষাগারে অজৈব অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড ও লেড সায়ানেট দ্রবণের বিক্রিয়ায় উৎপন্ন অ্যামোনিয়াম সায়ানেট দ্রবণকে উত্তপ্ত করলে আকস্মিকভাবে ইউরিয়া (HN-CO-NH2) উৎপন্ন হয়। এই ইউরিয়াই পরীক্ষারে প্রথম প্রস্তুতকৃত জৈব যৌগ। এজন্য ফ্রেডারিক উহলারকে জৈব রসায়নের জনক বলা হয়।

১৮৪৫ সালে বিজ্ঞানী এইচ. কোব মৌলিক উপাদান C, H O থেকে অ্যাসিটিক এসিড সংশ্লেষণ করেন। এর ফলে প্রাণশক্তি মতবাদ-এ প্রকাশিত ভুল বিশ্বাস চিরতরে দূরীভূত হল।

১৮৬৫ সালে বার্থেলো মিথেন নামে জৈব গ্যাস পরীক্ষাগারে তৈরি করেন।

Next Post Previous Post